পারমাণবিক যুদ্ধের প্রস্তুতি: রাশিয়াকে ঠেকাতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র?

পারমাণবিক যুদ্ধের প্রস্তুতি

পারমাণবিক যুদ্ধের প্রস্তুতি: পৃথিবী জুড়ে পারমাণবিক যুদ্ধ বা নিউক্লিয়ার যুদ্ধের যে উত্তেজনা মাথাচাড়া দিয়েছে তার জন্য পশ্চিমা নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া দায়ী করে চলেছে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট পুতিনকে। কিন্তু একচেটিয়া ভাবে তিনিই কি দায়ী? ইউক্রেন যুদ্ধের ছুতা ধরে এবং তার আগে থেকেই দেশটিকে এই পর্যায়ে আনার জন্য উত্তেজিত করেনি কি ইউরোপ আমেরিকা?

এখন দেশটিকে থামাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার নিজস্ব পারমাণবিক যুদ্ধের প্রস্তুতি বা পারমাণবিক কৌশল নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। সেটা তাহলে কেমন?

এই বছর আমেরিকা এবং রাশিয়ার মধ্যে সব শেষ অবশিষ্ট অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি নিউ স্টার্ট স্থগিত করেছেন পুতিন এবং তিনি তার প্রতিবেশী দেশ বেলারুশের টেকনিক্যাল নিউক্লিয়ার ওয়ার হেড স্থাপন করেছেন। এই স্ট্র্যাটেজি সাধারণত শত্রু পক্ষের ওপর ব্যবহার করা হয় না এগুলো বিপক্ষকে ভয় দেখিয়ে যুদ্ধে জয়ী করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

রাশিয়ার হাতে এক হাজার নয়শোটিরও বেশি টেকনিক্যাল পারমানবিক অস্ত্র রয়েছে। যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় প্রায় দশ গুণ বেশি। স্টার্ট চুক্তিটি কেবলমাত্র লং রেঞ্জ স্ট্র্যাটেজিক নিউক্লি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আর পুতিন হুমকি দিতে ব্যবহার করছেন ট্যাকটিক্যাল অস্ত্র গুলোই।

রাশিয়া যদি ট্যাকটিক্যাল নিউক্লিয়ারের স্ট্রাইক চালায় তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা রাশিয়ান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেই কেবল একটি দুর্বল গতানুগতিক হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেবে। আর এসব ঘটবে সম্ভবত ইউক্রেনে। কিন্তু যুদ্ধে পুতিন পরাজয়ের মুখোমুখি হলে ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর ওপর আরও টেকনিক্যাল নিয়োগ ব্যবহার করে বসতে পারে। তখন কি করবে পশ্চিমা জোট?

একটি scientific simulation model করে দেখা গেছে যে কিভাবে একটি একক ক্রোশিয়ান টেকনিক্যাল নিউক্লিয়ার স্ট্রাইকের পর এক ঘন্টারও কম সময়ের ব্যবধানে পাল্টাপাল্টি পারমাণবিক হামলা শুরু হয় চুয়াল্লিশ মিলিয়ন মানুষ মারা যায় এবং সাতান্ন মিলিয়ন মানুষ আহত হয়।

এটা তাৎক্ষণিক মৃত্যুর হিসেব। পরবর্তীতে আসা বিকিরণের মৃত্যুর হিসেব এখানে নেই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও বলেছেন ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার পর পারমানবিক বিকিরণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা চলবে।

প্রথমত যুক্তরাষ্ট্রকে তার পারমাণবিক অস্ট্রাগারের চলমান আধুনিকীকরণের অংশ হিসেবে রাশিয়ার সাথে ট্যাকটিক্যাল পরমাণু বস্ত্রের ব্যবধান কমাতে হবে। কংগ্রেসের বাজেট অফিস যে সাতশো ছাপান্ন বিলিয়ন ডলারের প্রোজেক্ট করেছে,

যা যুক্তরাষ্ট্র ও তার পারমাণবিক শক্তিকে আপগ্রেড করার জন্য আগামী দশকে ব্যয় করবে। তার মধ্যে মাত্র ছয় বিলিয়ন ডলার স্ট্র্যাটেজিক অস্ত্র ব্যয় করতে হবে। আর অস্ত্রগুলোর আধুনিকীকরণে ব্যয় হবে তিন বিলিয়ন ডলার। নিউক্লিয়ার অস্ত্রগুলো স্ট্র্যাটেজিক নাকি ট্যাকটিক্যাল এই আলোচনায় আর থাকতে চাইছে না মার্কিন বুদ্ধি বিশ্লেষকরা।

তাদের বক্তব্য হলো অস্ত্র যাই হোক না কেন তা ঠেকানোর যুক্তি একই থাকে। প্রতিপক্ষকে বোঝাতে হবে যে পারমাণবিক যুদ্ধই কখনো সাফল্য আনবে না এবং একবার শুরু করলে প্রতিপক্ষ যে জবাব দেবে তাতে কল্পনাতীত ধ্বংসের মধ্যে পড়বে পৃথিবী।

Top Stories BD এর সর্বশেষ ব্রেকিং নিউজ পেতে Google News অনুসরণ করুন