ইসরায়েল ফিলিস্তিন যুদ্ধ: ইহুদিরা যেভাবে ইসরায়েলকে ভয়ঙ্কর করে তুলছে

ইসরায়েল ফিলিস্তিন যুদ্ধ

ইসরায়েল ফিলিস্তিন যুদ্ধ একটি দেশ যখন শিল্পোন্নত আর ধনী হয়ে ওঠে সেখানে তখন টানা জনসংখ্যাগত রূপান্তর দেখা দেয়। জন্মহার কমে যায় জনসংখ্যা বাড়তে থাকা থেমে যায় এমনকি কমেও যায়। কোনো দেশে এমন পরিস্থিতি পার হওয়ার পর সেখানে প্রতি মায়ের সন্তান উৎপাদনের সক্ষমতা এক বা দুইয়ে এসে থামে।

অদ্ভুত বিষয় হলো ইসরায়েলের ক্ষেত্রে প্রতি মায়ের সন্তান উৎপাদনের সক্ষমতা তিন। শিক্ষাই সম্পদে উন্নত দেশটিতে সন্তান উৎপাদনের সংখ্যা কেন বেড়েছে? আর এই বৃদ্ধির ফলে দেশটি কি ধরণের জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীনই বা হতে যাচ্ছে।

ইসরায়েলের জনসংখ্যার সিংহভাগ মানুষ ইহুদি। ইহুদীরা শুধুএকটি নির্দিষ্ট ধর্ম পালনকারী গোষ্ঠী নয়। তারা একটি জাতি  একঈশ্বরবাদী ধর্ম, ইতিহাস, নানা অত্যাচার, নিপীড়ন আর যুদ্ধ বিগ্রহের ভেতর দিয়ে গিয়ে এই মানুষগুলো এখন কোন বহি শক্তির প্রভাব মানতে নারাজ।

আরব ইসরায়েল যুদ্ধের আগে সাড়ে ছয় লাখ ইহুদি আর সাড়ে নয় লাখ আরবের বাস ছিল ইসরায়েলে। যুদ্ধের পর দেশটি থেকে মুসলিম জনগোষ্ঠীকে চলে যেতে বাধ্য করা হয়। এখন সেখানে দেড় লাখ আরব মুসলিম ইসরায়েলের নাগরিক হিসেবে টিকে আছে। দেশটি থেকে উচ্ছেদ হওয়া মুসলিমরা এবং গাঁজা ও পশ্চিম তীরের মুসলিমরাও  নিজেদেরকে ফিলিস্তিনী হিসেবে পরিচয় দেয়।

ওই দেড় লাখ ফিলিস্তিনিকে ইসরায়েলের নাগরিক বলা হলেও ইসরায়েলি ইহুদীদের কাছ থেকে নানা দিক দিয়ে তাঁরা তাঁ বৈষম্যের শিকার। কাগজে কলমে গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে দাবী করলেও জাতি অধ্যুষিত দেশটি ফিলিস্তিনী মুসলিমদের প্রতি সত্যিকারের গণতন্ত্র দেখায় না।

মুসলিমরা এই বৈষম্য মোকাবিলার কৌশল হিসেবে বেছে নিয়েছে জনসংখ্যা বাড়িয়ে আধিপত্য বজায় রাখার পথ। ফলে দেশটিতে এর জন্মলগ্ন থেকেই ডেমোগ্রাফিক টেনশন রয়েছে।

কিন্তু ইজরাইলে ফিলিস্তিনীরা কখনোই সংখ্যায় ইহুদীদেরকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি বিভিন্ন সময় পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ইহুদীরা দেশটিতে চলে এসেছে এভাবেই ফিলিস্তিনীদের সঙ্গে জন্মহারের পার্থক্যটি পুষিয়ে নিয়েছে।

তবে বর্তমান বাস্তবতা ভিন্ন। ইসরায়েলে আরবদের সন্তান জন্ম দেওয়ার সক্ষমতার হার কমেছে, বেড়েছে ইহুদিদের। সেখানে এখন গোড়া ইহুদীদের প্রতি মায়ের সন্তান জন্ম দেওয়ার সক্ষমতা দশমিক ছয় চার। আর সেকুলার ইহুদীদের মায়ের দুই দশমিক চার সাত।

আরো পড়ুন:

উন্নত অনেক দেশের সঙ্গে তুলনা করলে দুই দশমিক চার সাত খুবই বড় সংখ্যা। যুক্তরাষ্ট্রের বেলায় সংখ্যাটি এক দশমিক ছয় চার। আর ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে এক দশমিক পাঁচ ছয়। যা হোক ইসরায়েলেই ফিরে আসি।

অধিকৃত গাঁজার পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপন করা হচ্ছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কম হওয়ায় সেখানে অনেক ইহুদী স্থানান্তরিত হচ্ছে। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ইহুদিদের বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রের তারা ধার্মিক। রাজনীতিতে তারা ওই আল্ট্রা অর্থোডকস ইহুদীদেরকেই শক্তিশালী করছে করবে। জনসংখ্যা বাড়িয়ে তারা গাঁজা আর পশ্চিম তীরেও আধিপত্য বাড়াবে।

গোরা ইহুদিদের ফার্টিলিটি রেট দেখে কি বোঝা যাচ্ছে? ধর্মের প্রতি যেসব ইহুদির ঝোঁক বেশি তাঁরা বেশি বেশি সন্তান নিচ্ছে। অর্থাৎ দেশটিতে তাঁরাই সংখ্যায় আধিপত্য বিস্তারের পথে। দুই হাজার পঁয়ষট্টি সালের মধ্যে ইসরায়েলের জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগ হবে এই আল্ট্রা অর্থোডাক্স ইহুদীরা।

এর মধ্যেই গোড়া আর secular ইহুদীদের দ্বন্দ্ব ইসরায়েলে রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্ম দিয়েছে। এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে গোড়া ইহুদিরাই শক্তিশালী হবে সংখ্যার জোরেই শক্তিশালী হবে। এভাবে ইসরায়েলের আরো ধর্মীয় কট্টরপন্থী হয়ে ওঠা দেশটির সঙ্গে প্রতিবেশী মুসলিম দেশগুলোর অস্থিরতাও বাড়াবে।

Top Stories BD এর সর্বশেষ ব্রেকিং নিউজ পেতে Google News অনুসরণ করুন